বাংলাদেশের সরকার সম্প্রতি এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎকে নতুন রূপ দিচ্ছে। এই সিদ্ধান্তগুলো কেবলমাত্র রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অর্থনীতি, পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে।
১/ শিক্ষা খাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বর্তমান সরকার শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বিনামূল্যে বই বিতরণ**: শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই সরবরাহ কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করা হয়েছে।
ডিজিটাল শিক্ষা**: গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই মানসম্পন্ন শিক্ষা পাচ্ছে।
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রসার**: কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে।
২. অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার উদ্যোগ।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে সরকার বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।
রপ্তানি বৃদ্ধিতে প্রণোদনা**: তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি কৃষিপণ্য ও আইটি সেক্টরে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে।
স্টার্টআপ ফান্ড**: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ**: নতুন নীতিমালার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের পথে বাধাগুলো দূর করা হয়েছে।
৩. পরিবেশ সংরক্ষণে নজরদারি।
পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
সবুজ উদ্যোগ**: শহরাঞ্চলে গাছপালা রোপণ ও গ্রামীণ অঞ্চলে বনায়ন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে।
পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি**: সৌর বিদ্যুৎ ও বায়ু শক্তি উৎপাদনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ**: একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৪. স্বাস্থ্য সেবায় নতুন দিগন্ত।
স্বাস্থ্যখাতে নতুন সিদ্ধান্তগুলো সরাসরি জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রসার**: প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে।
টেলিমেডিসিন সেবা**: দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসা সেবা প্রদান চালু হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিমা চালু**: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিমা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
৫. প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন।
বাংলাদেশকে একটি “ডিজিটাল নেশন” হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রযুক্তি খাতে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৫জি প্রযুক্তির উদ্বোধন**: উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ৫জি নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে।
স্টার্টআপ হাব**: আইটি উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য নতুন স্টার্টআপ ইনকিউবেটর তৈরি করা হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা উন্নয়ন**: সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে নতুন সাইবার সিকিউরিটি পলিসি গৃহীত হয়েছে।
৬. নারীর ক্ষমতায়ন।
নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান শক্তিশালী করতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
নারী উদ্যোক্তা তহবিল**: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা চালু করা হয়েছে।
নারী শিক্ষায় প্রণোদনা**: উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে।
কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা**: কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
৭. পরিবহন ও অবকাঠামো উন্নয়ন।
পরিবহন ও অবকাঠামো উন্নয়নে বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।
পদ্মা সেতুর পরবর্তী প্রকল্প**: দেশজুড়ে সংযোগ স্থাপন আরও সহজ করতে নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে।
মেট্রোরেল সম্প্রসারণ**: ঢাকায় মেট্রোরেলের পরিধি আরও বাড়ানো হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন**: আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলো আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।
৮. আইন ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা।
আইন ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকার বেশ কিছু নতুন নীতি গ্রহণ করেছে।
ই-গভর্নেন্স চালু**: প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতিবিরোধী অভিযান**: সরকারি কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নাগরিক সেবা সহজিকরণ**: বিভিন্ন নাগরিক সেবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহজে পাওয়া যাচ্ছে।
৯. কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন।
কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
কৃষকদের জন্য ভর্তুকি : সারের উপর ভর্তুকি বৃদ্ধি করে কৃষকদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন : গ্রামে রাস্তা ও বিদ্যুৎ সংযোগ উন্নত করা হচ্ছে।
জলসেচ ব্যবস্থার উন্নতি কৃষি সেচে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
উপসংহার,
বর্তমান সরকারের নতুন সিদ্ধান্তগুলো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই উদ্যোগগুলো শুধুমাত্র বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি মজবুত ভিত্তি স্থাপন করবে। দেশের উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।